বিশ্ব উষ্ণায়ন হলো জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বিশেষ ঘটনা। সাধারণত সময় বা কারণ-নিরপেক্ষ হলেও বৈশ্বিক উষ্ণায়ণ বলতে মূলত ইদানীং কালের উষ্ণতা বৃদ্ধিকেই নির্দেশ করা হয় এবং এটি মানুষের কার্যক্রমের প্রভাবে ঘটেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের রূপরেখা সম্মেলন বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে মানুষের কারণে সৃষ্ট, আর জলবায়ুর বিভিন্নতাকে অন্য কারণে সৃষ্ট জলবায়ুর পরিবর্তন বোঝাতে ব্যবহার করে। কিছু কিছু সংগঠন মানুষের কারণে পরিবর্তনসমূহকে মনুষ্যসৃষ্ট (anthropogenic) জলবায়ুর পরিবর্তন বলে।
কোনো কোনো অঞ্চল বিপজ্জনক মাত্রায় উত্তপ্ত হয়ে পড়বে এবং সেই সঙ্গে সমুদ্রের পানি বেড়ে বহু এলাকা প্লাবিত হবে। এ কারণে সেসব জায়গা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়বে এবং খাদ্য উৎপাদন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। বিভিন্ন প্রজাতির অস্তিত্বও হুমকির মুখে পড়বে তাদের চিরচেনা আবহাওয়া বদলের কারণে। বর্তমানে গ্রীষ্মে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও শীতকালে তীব্র শীত এবং কোনো কোনো সময় অনাকাঙ্ক্ষিত গরম, শীতকালে মুষলধারে বৃষ্টি, বৃষ্টির দিনে কম বৃষ্টি, অকাল বন্যা, বন্যার দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান, শিলাবৃষ্টি এ দেশের আবহমান আবহাওয়ার পরিবর্তনের ইঙ্গিত বহন করছে।
মূলভাবঃ বিদ্যা এবং চরিত্র এ দুটি মানবজীবনে মূল্যবান সম্পদ। বিদ্বানের সঙ্গ কল্যাণকর কিন্তু বিদ্বান অথচ চরিত্রহীন এমন ব্যক্তির সঙ্গ কখনাে মঙ্গলজনক নয়, এদের সঙ্গ সর্বদাই পরিত্যাজ্য। এ ধরনের বিদ্বান ব্যক্তিরা তাদের অসৎ চরিত্রের মাধ্যমে সজ্ঞানে দেশ, জাতি ও সমাজের ভয়ানক ক্ষতি করেন।
সম্প্রসারিত ভাব: বিদ্বান ব্যক্তি পৃথিবীর সর্বত্রই সম্মানিত। বিদ্বান ব্যক্তির জ্ঞান-আলাের সংস্পর্শে এলে সকলেরই মন আলােকিত হয়। তদুপরি যদি তিনি সৎ চরিত্রবান হন তবে তার চরিত্র মাধুর্য সকলকেই মুগ্ধ করে, তিনি সকলের ভক্তি ও শ্রদ্ধার পাত্র হন। আর যদি বিদ্বান ব্যক্তি চরিত্রহীন হন, তখন তিনি অশ্রদ্ধার পাত্র হন। কেউ সহজে তার সঙ্গে মিশতে চায় না, কথাবার্তা এমনকি চলাফেরাও করতে চায় না। সকলেই তার কাছ থেকে দূরে থাকে। কারণ চরিত্রহীন ব্যক্তি তার অসৎ উদ্দেশ্য ও হীনস্বার্থ হাসিলে তৎপর থাকেন। তিনি তখন দুর্জন ব্যক্তির মতাে ভয়ংকর রূপ নেন। যেকোনাে অন্যায় কাজ করতে তিনি দ্বিধা করেন না। এ ধরনের ব্যক্তির সাহচর্য পেলে নিজ চরিত্রও কলুষিত হতে পারে। তাই চরিত্রহীন বিদ্বান ব্যক্তির সাহচর্য আমাদের কারাে কাম্য নয়। বিষধর সাপের মাথায় মহামূল্যবান মণি থাকে, তাই বলে মণি লাভের নিমিত্তে বিষধর সাপের কাছে গেলে মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকে। তেমনি বিদ্বান অথচ চরিত্রহীন ব্যক্তির সাহচর্যে গিয়ে বিদ্যা লাভ করলে বিপদও হতে পারে । সমাজে ঘৃণিত ও নিন্দনীয় হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সাধনা করে অর্জন করা বিদ্যাও অর্থহীন হয়ে পড়তে পারে। তাই চরিত্রহীন বিদ্বান ব্যক্তিকে সবসময় এড়িয়ে চলা উচিত।
মূলভাব: সৌন্দর্য প্রকৃতির এক অসামান্য উপহার এ সৌন্দর্য কোথায় বিশিষ্টতা অর্জন করতে সক্ষম, তা প্রকৃতিই নির্ধারণ করে দেয়। এর ব্যতিক্রম ঘটলে সৌন্দর্য ম্লান হয়ে যায়। সম্প্রসারিত ভাব : প্রত্যেকটি সৃষ্টিই পরিবেশের পটভূমির ওপর নিজের প্রকৃত সৌন্দর্য ফুটিয়ে তোলে. যথাস্থানেই তাকে সুন্দর ও সাবলীল দেখায় । যেমন: বুনো মানুষের স্বভাব, চরিত্র, আচার-আচরণ স্বাভাবিক নিয়মে বনের মধ্যেই সুন্দরভাবে বিকাশ লাভ করে থাকে । কিন্তু তারা যদি আধুনিক সভ্যতার আলোকে আলোকিত শহরে আসে তবে তাদের জীবন কুৎসিত বলেই প্রতীয়মান হয় । ঠিক তেমনই মায়ের কোলে শিশুকে যেমন সুন্দর লাগে, অন্য কারও কোলে তত সুন্দর মানায় না। এজন্যে অনেক বড় বড় শিল্পী মা ও শিশুর ছবি এঁকেছেন, যেখানে শিশুকে মাতৃক্রোড়েই দেখানো হয়েছে । লিওনার্দো দ্যা ভিঞ্চি এবং পাবলো পিকাসো ছাড়া আরও অনেক ক্লাসিক্যাল ও আধুনিক শিল্পী শিশুকে মাতৃক্রোড়েই স্থান দিয়েছেন। শিশুর জন্য তার মায়ের কোলই উপযুক্ত জায়গা । এটা প্রকৃতির চিরায়ত নিয়ম । আবার বন্য প্রাণীদেরকে বনে যেমন সুন্দর সৌন্দর্য বিকশিত হবে না। কাজেই প্রাকৃতিক নিয়মে যে যেখানে সুন্দর তাকে সেখানেই থাকতে দেওয়া উচিত। সেখানেই তার মুক্তি, সেখানেই তার সহজ সাবলীল ও স্বাধীন সুন্দর প্রকাশ । তাই মনীষীরা বলেন, “যার যেখানে স্থান তাকে সেখানে থাকতে দাও ।’ কেননা যে যেখানে যে পরিবেশে প্রতিপালিত হয়, তাকে সেখানেই সুন্দর মানায় । প্রতিটি সৌন্দর্যেরই একটা নির্দিষ্ট স্থান রয়েছে । সেই নির্দিষ্ট স্থান এবং পরিবেশেই তা যথার্থ বিকাশ লাভ করে, অন্যত্র নয়।