যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ
মূলভাব
"যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ" প্রবচনটি মানুষের পরিবেশ ও পরিস্থিতির প্রভাবকে বোঝায়। এটি নির্দেশ করে, মানুষ যে পরিবেশে যায়, তার আচরণ, মানসিকতা এবং নৈতিকতা সেই পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়। এই প্রবচন থেকে বোঝা যায়, কেউ যদি অন্যায় ও দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশে প্রবেশ করে, তবে তার চরিত্র এবং নৈতিকতাও সেই অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।
সম্প্রসারিত ভাব
মানুষের চরিত্র অনেকাংশে তার পরিবেশ ও সঙ্গদোষের ওপর নির্ভরশীল। একজন ভালো মানুষও যদি অন্যায়, দুর্নীতি এবং অসৎ ব্যক্তিদের মধ্যে বসবাস করে, তবে তার মনোবৃত্তি ও আচরণ সেখান থেকে প্রভাবিত হতে পারে। যেমন রাবণ ছিল লঙ্কার রাজা, এবং তার রাজ্যে থাকা লোকজন তার অন্যায় আচরণে অভ্যস্ত ছিল। যারা সেখানে যেত, তারাও সেই পরিবেশে অভ্যস্ত হয়ে রাবণের মতো আচরণ করতে শুরু করত।
এই প্রবচন আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা দেয়। পরিবেশ মানুষের চরিত্র গঠনে বিরাট ভূমিকা পালন করে। একজন শিক্ষার্থী যদি খারাপ সঙ্গ পায়, তবে তার পড়াশোনা এবং নৈতিকতা নষ্ট হতে পারে। একজন সৎ ব্যবসায়ীও যদি দুর্নীতিগ্রস্ত পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য হয়, তবে তার পক্ষে সৎ থাকা কঠিন হয়ে পড়ে।
তবে এই প্রবচন আমাদের সতর্ক থাকার জন্যও একটি বার্তা দেয়। আমরা যদি সৎ, ন্যায়পরায়ণ এবং নৈতিকতাপূর্ণ পরিবেশে থাকতে পারি, তবে আমাদের চরিত্রও সেভাবেই গড়ে উঠবে। আর অন্যায় পরিবেশে টিকে থাকতে হলে আমাদের দৃঢ় নৈতিক অবস্থান ধরে রাখতে হবে। যারা সৎ ও সাহসী, তারা পরিবেশের প্রভাবকে কাটিয়ে উঠতে পারে এবং অন্যায়কে প্রতিরোধ করতে পারে।
উপসংহার
"যে যায় লঙ্কায়, সেই হয় রাবণ" প্রবচনটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে পরিবেশ ও সঙ্গ মানুষের ওপর গভীর প্রভাব ফেলে। তাই আমাদের উচিত ভালো সঙ্গ এবং নৈতিকতাপূর্ণ পরিবেশে নিজেকে রাখা। একই সঙ্গে অন্যায় পরিবেশে নৈতিকতা ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে। যদি সবাই নিজের অবস্থান বজায় রাখে, তবে কোনো পরিবেশই মানুষের চরিত্রকে বদলাতে পারবে না।